ঢাকা, বুধবার, ১৫ মে, ২০২৪

শ্রীপুরে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুতে ঝুঁকি নিয়ে চলছে হাজারো মানুষ

গাজীপুরের শ্রীপুরের নদীবন্দর বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত “বরমী বাজার”। শীতলক্ষ্যা ও বানার নদীর মোহনায় বাজারটির অবস্থায় হওয়ায় নদী বন্দর হিসেবে সেই ব্রিটিশ শাসন আমল থেকে বরমী বাজার পরিচিত লাভ করেছে। প্রায় কয়েক হাজার ছোট বড় ও মাঝারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই বাজারে। নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন শ্রীপুর উপজেলা, পাশ্ববর্তী কাপাসিয়া ও ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার ছোট-বড় ব্যবসায়ী এবং হাজারও লোকজনের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে বাজারটি। বাজারটি শীতলক্ষ্যা নদী, বানার নদী ও নালজোড়া খালদ্বারা বেষ্টিত। মানুষের যাতায়াত ও বাজারের ব্যবসায়ীদের সুবিধার্থে বাজারের প্রবেশ মুখেই নালজোড়া খালের উপর প্রায় ৫১বছর আগে নির্মাণ করা হয় একটি সেতু। সেতুটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা, চলাচল করছে যানবাহন। প্রায় ৩ বছর আগে সেতুটির পাশে ঝুলছে সতর্কীকরণের সাইনবোর্ড লাগানো হলেও সেতুটি সংস্কার বা পূণনির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি আজও। এতে দুর্ঘটনার আশংকা মাথায় নিয়ে বাধ্য হয়ে পথচারী, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এই সেতু ব্যবহার করে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।বরমী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, প্রায় ৫১ বছর পূর্বে বাজারের প্রবেশ মুখে কেন্দুয়া এলাকায় নালজোড়া খালের উপর নির্মিত সেতুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন সেতুর উপর দিয়ে ব্যবসায়িক প্রয়োজনে শত শত ছোট, মাঝারী ও ভারী যান চলাচল করে। অতিরিক্ত যানের চাপে গত তিন বছর আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় সতর্কতা নিয়ে চলাচলের জন্য একটি সাইনবোর্ড দেয়া হয়। বর্তমানে এই সেতুটির পিলারগুলো নড়বড়ে হয়ে পড়ায় যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনার আশংকা তৈরী হয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমিসহ বরমী ইউনিয়ন পরিষদের প্রয়াত চেয়ারম্যান শামসুল হক বাদল সরকার একাধিকবার এই সেতুটির ঝুঁকিপূর্ণ পরাই স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করলেও সেতুটি পূনঃনির্মানে কোন ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি।বরমী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ড সদস্য আলী আমজাদ পন্ডিত জানান, বরমীর শীতলক্ষ্যা নদীর মাধ্যমে আসা অধিকাংশ বালি বরমী বাজার থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় পরিবহন করা হয়। রাতের বেলায় ভারী যানবাহনের চাপ থাকে এই ঝুঁকিপুর্ণ সেতুর উপর। এতে যে কোন সময় তা ভেঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।বরমী বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম সরকার বলেন, ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহনে প্রতিনিয়ত আমাদের এই সেতুটি ব্যবহার করতে হয়। কয়েক বছর ধরে সেতুটির ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার প্রেক্ষিতে আমাদের ভিন্ন পথ ব্যবহার করতে হয়। এতে প্রায় ১০ কিলোমিটার ঘুরে পণ্য পরিবহন করতে অনেক সময় লাগে সাথে, সাথে অর্থেরও খরচ হয় বেশী। অর্থনৈতিক গুরুত্বধাবনে জররুীভাবে সেতুটি মেরামতে উদ্যোগ নিলে দুর্ভোগ কমে আসত।বালি পরিবহনকারী ট্রাকের চালক আল আমিন বলেন, এই সেতুর উপর যখন গাড়ী নিয়ে উঠি তখন ভয়ে ভয়ে থাকি, কখন না জানি ভেঙ্গে পড়ে। জীবিকার তাগিদে অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমাদের গাড়ী নিয়ে এই সেতু পারাপার করতে হয়।শ্রীপুরের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদুল ইসলাম জানান, সেতুটির গুরুত্ব বিবেচনা করে ডিজাইন তৈরি করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হলে জি ডি পি ৩ এর আওতায় ইতিমধ্যেই দরপত্র অনুমতির প্রক্রিয়া রয়েছে। 

ads

Our Facebook Page